রিকশা চালিয়ে জিপিএ-৫ পাওয়া দুই ভাই যা বললেন

রিকশা চালিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করলেন দুই সহোদর। তারা হলেন শেরপুর জেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের মো. মোশাররফ হোসেনের ছেলে মিনহাজুল আবেদীন (নয়া) ও

তৌহিদুর রহমান (নিশাত)। তারা উভয়ই গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। রিকশা চালিয়ে এসএসসিতে

জিপিএ-৫ পাওয়া দুই ভাই যা বললেন জানা যায়, বাবা-মাকে নিয়ে চারজনের পরিবার তাদের। মিনহাজুল ও তৌহিদুলের বাবা মোশাররফ হোসেন গার্মেন্ট ব্যবসা করতেন। ২০১৭ সালে

ব্যবসায়িক বড় ক্ষতির সম্মুখীন হন। বাবার ব্যবসায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ও সংসারের হাল ধরে দুই ভাই। রাতে টঙ্গীতে রিকশা চালিয়ে উপার্জনের টাকা তুলে দিত বাবার হাতে। মিনহাজুল ও তৌহিদুল বলেন,

আমরা শেরপুরে বাস করতাম। সেখান থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় পাশ করি। ব্যবসায় লোকসানের পর

রিকশা চালিয়ে বাবার একার পক্ষে সংসার চালানো ও পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই টঙ্গীতে এসে আরিচপুর এলাকায় বাসা ভাড়া নেই। দুই ভাই লেখাপড়ার পাশাপাশি

রিকশা চালানোর সিদ্ধান্ত নেই। দিনে ক্লাশ করে সন্ধ্যায় দুভাই রিকশা চালাতাম। রিকশা চালিয়ে পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ ও নিজেদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছি। আমাদের এই অর্জন সম্ভব হয়েছে শুধু আমাদের স্কুলের অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমান স্যারের জন্য। স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর

থেকেই স্যার আমাদের মাসিক বেতন ও অন্যান্য ফি মওকুফের ব্যবস্থা করে দেন। লেখাপড়ার মান উন্নয়নের জন্য দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণাও দিতেন।

টঙ্গী সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমান বলেন, আমাদের স্কুলের দুই শিক্ষার্থী মিনহাজুল ও তৌহিদুল। তারা দুই ভাই একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় আংশ নিয়ে জিপিএ-৫ অর্জন করেছে।

স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আমি তাদের সাবসময় খোঁজখবর রেখেছি। যতটুকু সম্ভব তাদের সহযোগিতা করেছি। অধ্যবসায় ও কঠোর পরিশ্রম করলে যে ভালো ফলাফল করা যায় মিনহাজুল ও তৌহিদুল দৃষ্টান্ত। তারা পরিশ্রমী। আশা করি, সুযোগ-সুবিধা পেলে তারা অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*