





মাগুর বাংলাদেশের বহুল প্রচলিত মাছগুলোর মধ্যে একটি যার মূল প্রাপ্তিস্থান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। এর স্থানীয় নাম মজগুর,





মচকুর বা মাগুর। আন্তর্জাতিকভাবে এটি ওয়াকিং ক্যাটফিস নামে পরিচিত। এই নামের কারণ হলো এটি শুষ্ক মাটির উপর দিয়ে





প্রতিকূল পরিবেশ বা খাদ্য সংগ্রহের জন্য হেঁটে যেতে পারে। এই বিশেষ হাঁটার জন্য মাগুর মাছের বুকের কাছে পাখনা থাকে যা





ব্যবহার করে এটি সাপের মত চলাচল করতে পারে। এই মাছের অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র আছে যার মাধ্যমে এটি বাতাস থেকে





শ্বাস নিতে পারে। দৈহিক বৈশিষ্ট্য মাগুর মাছ সাধারণত ৩০ সে.মি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৪৭ সে.মি হতে পারে। মাছের গায়ে





কোন আঁশ থাকেনা। এরা অস্থিময়, মাথা অবনত এবং দুটি খাঁজ বিদ্যমান৷ পিঠের পাখনা লম্বা এবং চার জোড়া শুড় আছে৷ মাথা চ্যাপ্টা, মুখ প্রশস্ত, গায়ের রং লালচে বাদামী বা ধূসর কালো রংয়ের। কোন কোন ক্ষেত্রে পরিপক্ব স্ত্রী মাছের গায়ের রং ধূসর এবং পুরুষ মাছগুলির গায়ে হালকা বলয় থাকে। স্ত্রী মাছে কোন বলয় থাকে না।
মাছের পৃষ্টদেশে ও পায়ুতে বড় বড় পাখনা থাকে।এই মাছ সর্বোচ্চ ১.১ঌ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। প্রাপ্তিস্থান মাগুর মাছ বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোচীন, ফিলিপাইন, হংকং, দক্ষিণ চীন এবং ইন্দোনেশিয়াতে পাওয়া যায়।[২] এটি মূলতঃ গ্রীষ্মমন্ডলীয় মাছ এবং পানির তাপমাত্রা ১০-২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা।
মাছ সাধারণত পানির তলদেশে খাল, বিল, নদী-নালা, হাওড়-বাওড়, ধান ক্ষেতের কর্দমাক্ত পানি এমনকি উপকূলীয় এলাকায় ঈষৎ লোনা পানিতে স্বাভাবিকভাবে বিচরণ করে। খাদ্যাভাস মাগুর মাছ প্রধানত পুকুরের তলদেশ থেকে খাবার খায়। ছোট অবস্থায় সবুজ কণা ও প্রাণীকণা, আধাপচা পাতা, কীট, জলজ সন্ধিপদ প্রাণী, পতঙ্গ খায়। প্রাপ্তবয়ষ্ক মাছ বিভিন্ন পোকামাকড়, শূককীট বা মূককীট, জলদ উদ্ভিদ,
প্রটোজোয়া, শামুক ঝিনুক, কাদা, বালি ইত্যাদি খেয়ে জীবন ধারণ করে। বিভিন্ন সম্পুরক খাদ্য যেমন- কুঁড়া, ভূষি, ফিসমিল ইত্যাদিও এরা খেয়ে থাকে। পুষ্টিগুণ মাগুর মাছের পুষ্টিগুণ ব্যাপক। অসুস্থ রোগীর খাদ্য হিসেবে এই মাছ বহুল প্রচলিত। প্রতি ১০০ গ্রাম মাগুর মাছে ৩২.০ গ্রাম আমিষ, ২.০ গ্রাম চর্বি, ১৭২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩০০ মিলিগ্রাম ফসফরাস এবং ০.৭ মিলিগ্রাম লোহা থাকে।
ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন…
Leave a Reply