অভিনব কায়দায় টেটা দিয়ে বোয়াল মাছ শিকার করলো যুবক, মাছ ধরার এমন পদ্ধতি ভিডিও তুমুল ভাইরাল!

বর্তমানে বিপন্ন প্রজাতির মাছ বোয়াল। প্রাকৃতিক অভয়াশ্রম নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে এই মাছটিকে

আগের মত আর পাওয়া যায় না। অথচ সামান্য একটু উদ্যোগ নিলেই এই বোয়াল মাছটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে

রক্ষা করা যায় অনায়াসে। বোয়াল একটি রাক্ষুসে স্বভাবের মাছ। কাজেই এ মাছটিকে প্রজননের আওতায় এনে

উৎপাদন করতে কয়েকটি বিশেষ দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বোয়ালের প্রজনন মৌসুম: মধ্য এপ্রিল থেকে

আগষ্ট মাস পর্যন- বোয়াল মাছ ডিম দিয়ে থাকে। প্রজননের সময় খুব সহজেই পুরুষ ও স্ত্রী মাছকে শনাক্ত করা যায়। প্রজননের জন্য

উপযোগী স্ত্রী ও পুরুষ মাছ বাছাই: আগেই উল্লেখ করেছি, প্রজনন মৌসুমে স্ত্রী মাছের পেট ভর্তি ডিম থাকে আর পুরুষ মাছের পেট সাধারণ মাছের মত থাকে। তাছাড়া পুরুষ মাছের পেটে চাপ দিলে সাদা মিল্ট বেরিয়ে আসে। এ থেকে সহজেই বোয়ালের পুরুষ ও স্ত্রী মাছ শনাক্ত করা যায়। হরমোন ইঞ্জেকশনের দ্রবণ তৈরি এবং ইঞ্জেকশন দেওয়ার পদ্ধতি:

বোয়াল মাছকে পি.জি. (পিটইটারী গ্ল্যান্ট) হরমোন দিয়ে ইঞ্জেকশন করলেই ডিম দিয়ে থাকে। প্রথম ডোজের সময় শুধুমাত্র স্ত্রী মাছকে ইঞ্জেকশন দিতে হয়। ডোজের মাত্রা ২ মি: গ্রা: কেজি। ৬ ঘন্টা পর দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয় ৪ মি: গ্রা:/ কেজি। ২টি পদ্ধতিতে বোয়ালের ডিম সংগ্রহ করা যায়।

প্রথম পদ্ধতি (চাপ প্রয়োগ পদ্ধতি): মাছকে পি.জি হরমোন ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর পুরুষ ও স্ত্রী মাছকে আলাদা আলাদা হাউজে রাখতে হবে। দ্বিতীয় ডোজের ৬ ঘন্টা পর সাধারণত বোয়াল মাছ ডিম দিয়ে থাকে। মাছের ডিম পাড়ার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে, যখনই ২/১টি ডিম বের হতে দেখা যাবে তখনই মাছগুলোকে একে একে হাউজ থেকে তুলে আনতে হবে।

এবার স্ত্রী মাছের পেটে আস্তে করে চাপ দিলেই ডিম বের হতে থাকবে। স্ত্রী মাছের ডিম বের করার পর তাৎক্ষণিকভাবে পুরুষ মাছের পেটে চাপ দিয়ে মিল্ট বের করে ডিমের উপর পাখির পালক দিয়ে ভালভাবে মিশাতে হবে। এরপর ডিমগুলোকে ২/৩ বার বিশুদ্ধ পানিতে পরিষ্কার করে ৩/৪ ইঞ্চি উচ্চতার পানির হাউজে রাখতে হবে। চিকন প্লাষ্টিক পাইপকে ছিদ্র করে ঝর্ণার ব্যবস্থা করতে হবে। এভাবে ২০/২২ ঘন্টার মধ্যেই ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হবে।

দ্বিতীয় পদ্ধতি (প্রাকৃতিক পদ্ধতি): প্রথম পদ্ধতিতেই মাছকে হরমোন ইঞ্জেকশন দিয়ে পুরুষ ও স্ত্রী মাছকে একসাথে একটি বড় হাউজে ছেড়ে দিতে হবে। তাতে দ্বিতীয় ডোজের ৬ ঘণ্টার মধ্যেই প্রাকৃতিকভাবে এরা ডিম পারবে। ডিম পারা শেষ হলে ব্রুডমাছগুলোকে সর্তকতার সাথে সরিয়ে নিতে হবে। তারপর হাউজের পানি কমিয়ে ৩/৪ ইঞ্চি রেখে ছিদ্রযুক্ত পাইপ দিয়ে পানির ঝর্ণা দিতে হবে। এখানেও ২০/২২ ঘন্টার মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা বের হবে।

পোনা লালন-পালন পদ্ধতি: বোয়ালের পোনা খুবই রাক্ষুসে স্বভাবের। ডিম থেকে ফুটার ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই একটি আরেকটিকে খেতে শুরু করে। পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, অন্যান্য মাছের রেনু পোনা ডিমের কুসুম বা ক্ষুদ্র আকৃতির প্ল্যাংকটন খেলেও বোয়ালের পোনা ডিমের কুসুম বা কোন ধরনের প্ল্যাংকটন খায় না। সে ক্ষেত্রে তাদেরকে জীবিত অবস্থায় মাছের রেনু বা পোনাকে খেতে দিতে হয়। এভাবে ৮/১০ দিনেই ২ ইঞ্চি সাইজের পোনায় পরিণত হয়।

বোয়াল মাছের চাষ পদ্ধতি: গবেষণায় দেখা গেছে যে, বোয়াল মাছ এককভাবে চাষ করা যায় না। একটা আরেকটাকে খেতে খেতে শেষ পর্যন- আর বাকি থাকে না। তা ছাড়া কৃত্রিম খাবার না খাওয়ায় মাছগুলো খুব একটা বড়ও হয় না। তাই এদেরকে বিভিন্ন মাছের সাথে মিশ্র চাষ করে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। মজুদ ঘনত্ব মিশ্রচাষে প্রতি ৫ শতাংশে ১টি মাছ।

মাছ ছাড়ার সময় একটা দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে যে, বোয়ালের পোনা যেন কোন অবস্থাতেই পুকুরের অন্যান্য মাছের আকারের সমান না হয়। সে ক্ষেত্রে অন্যান্য মাছের ওজন যখন ১৫০/২০০ গ্রাম ওজন হবে সেখানে ২ ইঞ্চি সাইজের বোয়ালের পোনা ছাড়তে হবে। আর তা না হলে বোয়াল দ্রুত বড় হয়ে অন্যান্য মাছ খেয়ে ফেলতে পারে।

ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন…

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*