





সুন্দরবনের দুবলারচর। এখানে বিশ হাজারের বেশি মানুষের বাস। তবে সবাই পুরুষ। কোনো নারী





খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাসিন্দাদের পেশা মাছ ধরা আর শুঁটকি তৈরি। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়েই





চলে এসব মানুষের জীবনযাত্রা। বিদ্যুৎবিহীন এই এলাকার মানুষের জন্য খাবার পানির ব্যবস্থা নেই। নলকূপ বা





টিউবওয়েলের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। খাওয়ার পানির জন্য একমাত্র ভরসা বৃষ্টি। বৃষ্টি এলে শুঁটকি তৈরির জন্য





খুবই অসুবিধা হয়। নষ্ট হয়ে যায় অনেক শুঁটকি। তারপরও খাওয়ার পানির জন্য বৃষ্টির অপেক্ষা করেন। কারণ বৃষ্টি এলে





পানি সংরক্ষণ করা যায়। আর এই পানিতেই তৃষ্ণা মেটে। সরেজমিন সুন্দরবন ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। চরের কয়েকজন জানান, এখানে যারা বসবাস করেন তারা সবাই জেলে বা শুঁটকির কারবারি। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে এখানে অস্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেছেন। প্রতিবছরই তারা আসেন। নির্দিষ্ট সময় পর তারা স্থায়ী ঠিকানায় চলে যান। এসব মানুষের জন্য এই চরে চিকিৎসার সুব্যবস্থা নেই।
কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই রোগী মারা যান। তাদের জন্য চারটি সাইক্লোন শেল্টার আছে। কিন্তু সবকটিই রয়েছে প্রভাবশালীদের দখলে। দাদন এবং সুদের ব্যবসা এখানে রমরমা। অনেক কষ্ট করে জেলেরা মাছ অহরণ করলেও অনেক ক্ষেত্রেই মাছ বিক্রির স্বাধীনতা তাদের নেই। সুন্দরবনের দক্ষিণে পশুর নদীর পূর্বদিকে দুবলারচর অবস্থিত।
জেলেরা জানান, দুবলারচরের পাশের নদীতে জাল ফেললেই মাছ আর মাছ। সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ভরে যায় ট্রলার ও নৌকা। কিন্তু এগুলোর প্রকৃত দাম তারা পান না। এ কারণেই তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন না। সরকারের পক্ষ থেকে যদি পুঁজি দেওয়া হতো, তাহলে এক-দুই বছরের মধ্যেই তারা বড় ব্যবসায়ী হতে পারতেন।
তারা আরও জানান, তারা বিপুল অঙ্কের টাকার সম্পদ আহরণ করেন। কিন্তু এ সম্পদ স্বাধীনভাবে বিক্রি করার অধিকার তাদের নেই। দাদনদাররা যে দাম নির্ধারণ করে দেন, সেই দামেই বিক্রি করতে হয়। তারা স্বধীনভাবে মাছ বিক্রি করতে পারলে, কারও কাছ থেকে সুদ বা দাদন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ত না। মাছ বিক্রির ক্ষেত্রে জেলেরা বাজারমূল্যের অর্ধেক দামও পান না। এছাড়া জেলেরা যে চিংড়ি ধরেন, সেগুলোও বিক্রি করতে পারে না। এ মাছ মহাজনকে বিনামূল্যে দিয়ে দিতে হয়।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
Leave a Reply