





পৃথিবীতে দশ হাজারের বেশি প্রজাতির পাখির খোঁজ মিলেছে এখনও পর্যন্ত। চারপাশে উড়তে থাকা এবং





কিচিরমিচির করা পাখি দেখে চাপমুক্ত হয় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। ভারত-সহ প্রায় সব দেশেই পাখির সমাহার দেখা যায়। পোষ্য থেকে





পরিযায়ী, পাখির ধরন বিভিন্ন। পাখিদের মধ্যে বিশেষত পরিযায়ীরা বছরের নির্দিষ্ট সময়ে এরা বিশাল দূরত্ব অতিক্রম করে একস্থান থেকে





অন্য স্থানে যায়। এই ধরনের স্থানান্তর থেকে বেশি দেখা যায় স্বল্পদৈর্ঘ্যের অনিয়মিত গতিবিধি। বেশিরভাগ পাখিই সামাজিক জীব। এরা দৃষ্টিগ্রাহ্য





সংকেত এবং ডাক বা শিষের মাধ্যমে একজন আরেকজনের সাথে যোগাযোগ করে। পাখির অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেশি। খাদ্য হিসেবে





এদের গুরুত্ব অপরিসীম। মাংসের জন্য এদের বহু প্রজাতিকে শিকার করা হয় আর কিছু প্রজাতিকে বাণিজ্যিকভাবে পালন করা হয়। কিন্তু পাখির রূপ নিয়ে সবচেয়ে বেশি চর্চা হয়ে থাকে। পৃথিবীতে এমন কিছু পাখি আছে যাঁদের দৈহিক গঠন, জমকালো রং এবং অসাধারণ কিছু গুণের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরতম পাখি হিসেবে তারা স্বীকৃতি পায়।
এমনই ৫টি পাখির কথা রইল আপনাদের জন্য।মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার চিরস্থায়ী আর্দ্র বনাঞ্চলের বাসিন্দা স্কারলেট ম্যাকাও। এরা ম্যাকাও প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম ও সুন্দরতম সদস্য। উজ্জ্বল লাল, নীল ও হলুদ রঙের সমাহারে স্কারলেট ম্যাকাওয়ের মোহনীয় রূপ সকলকেই মুগ্ধ করে। সেইসঙ্গে এর উপরের দিকের হলুদ ডানার শেষাংশে সবুজ রঙেরও বেশ সুন্দর একটা প্রলেপ রয়েছে।
শক্তিশালী বাঁকা ঠোঁট, দীর্ঘতম সময় উড়তে পারার ক্ষমতাও এদের আলাদা করে চিনিয়ে দেয়। দক্ষিণ-পূর্ব মেক্সিকো থেকে আমাজনীয় পেরু ও বলিভিয়ায় এই পাখি বেশি দেখা যায়। কোইয়া দ্বীপেও রয়েছে বহু স্কারলেট ম্যাকাও। হন্ডুরাস এই পাখিটিকে জাতীয় পাখি ঘোষণা করেছে। স্কারলেট ম্যাকাও বাঁচে প্রায় ৪০-৪৫ বছরের মতো,
স্বাভাবিক কারণেই এরা দীর্ঘ আয়ুর পাখি হিসেবেও বিবেচিত হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান পাখি বলা হয় এদের, মানুষের কণ্ঠস্বর হুবহু নকল করতে পারে এরা।গোল্ডেন ফিজ্যান্টের মাথায় ক্রেস্টের মতো দুর্দান্ত গোল্ডেন ফার্ন-সহ একটি প্রাণবন্ত লালচে-কমলা ঘাড় রয়েছে। প্রধানত পশ্চিম চিনের ঘন বনাঞ্চলে দেখা যায় এদের। পাখিটি প্রায় ৯০-১০৫ সেমি পর্যন্ত বড় হয় এবং লেজের দৈর্ঘ্য পাখির আকারের দুই-তৃতীয়াংশ।
তবে গোল্ডেন ফিজ্যান্ট নামটি প্রাচীন গ্রীক শব্দ ‘খরাসোলোফোস’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘আঁকা’। পুরুষ পাখিগুলির ওজন ১.৪ কেজি মতো হয়, এবং স্ত্রী পাখিদের ওজন ১.২ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। সঙ্গমের সময় তার সৌন্দর্য্য প্রদর্শনে সহায়তা করার জন্য গোল্ডেন ফিজ্যান্টের ঘাড়ে কমলা কেপ বিশেষ লক্ষ্যনীয়। প্রতি মরসুমে একটি স্ত্রী গোল্ডেন ফিজ্যান্ট ৪০টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে।
চিনে এই পাখিটিকে খাওয়াও হয়।আন্টার্কটিকা ছাড়া প্রায় সব দেশেই দেখতে পাওয়া যায় ফ্ল্যামিংগো। পাখিটি মুগ্ধ করে তার কমলা সৌন্দর্য্যে। ফ্ল্যামিংগো নামটি পর্তুগিজ বা স্প্যানিশ শব্দ ‘ফ্লামেঙ্গো’ থেকে এসেছে, যার অর্থ বর্ণযুক্ত শিখা। ফ্লেমিংগোর শরীরে শিখার মতো স্তর দেখতে পাওয়া যায়। দীর্ঘ দূরত্ব একেবারে অতিক্রম করার ক্ষমতা রয়েছে এদের। শুধু তাই নয়, প্রতি ঘন্টায় ৫৬ কিলোমিটার গতিতে উড়ে যেতে পারে এরা।
ফ্ল্যামিংগোকে ‘ওয়েডিং বার্ড’ও বলা হয়। সাঁতার কাটতেই অত্যন্ত পটু এরা। পৃথিবীতে প্রায় ৬ প্রজাতির ফ্ল্যামিংগো রয়েছে। পূর্ণবয়স্ক ফ্ল্যামিংগো দৈর্ঘ্যে ৪-৫ ফুট ও ওজনে প্রায় সাড়ে তিন কেজি পর্যন্ত হয়। এদের দীর্ঘ গলা ও দীর্ঘ পা কাদা থেকে ছোট মাছ, প্ল্যাঙ্কটন খেতে সাহায্য করে।মূলত পূর্ব ও মধ্য উত্তর আমেরিকার বনাঞ্চলের পাখি ব্লু জে। নীল, সাদা ও কালো রঙের সমাহারে সাজানো হয় এরা, যা এদের সৌন্দর্য্যের মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
সাধারণত দুষ্ট স্বভাবেপ হওয়ায় এবং শরীরে নীল রঙের প্রভাব বেশি থাকায় এদের নামকরণ হয়েছে ব্লু জে হিসেবে। এমনকী ডাকের সময়ও এরা জে জে বলেই ডাকাডাকি করে। মোহনীয় চেহারা ছাড়াও এই পাখিটির নিজের বুদ্ধিমত্তার জন্যও বিশেষ সুনাম রয়েছে। অন্য পাখিদের ডাক অনুকরণের এক অনন্য ক্ষমতা এদের রয়েছে, যা অন্য পাখিদের বিব্রত করে দেয় মাঝেমধ্যে। অন্য পাখির ডিম ও বাসাও চুরি করে এরা। অন্য পাখিদের ভয় দেখাতে ঈগলের ডাক হুবহু নকল করতেও এদের নাম রয়েছে।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
Leave a Reply