





ভোজন রসিক বাঙালি দের ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরির উপকরণ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উপকরণ হচ্ছে ঘি। ঘি ভারতীয় উপমহাদেশে





উদ্ভূত হওয়া পরিশোধিত মাখন। খাবারের স্বাদ- গন্ধ বৃদ্ধিতে ঘি এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী রান্নায় বহুদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।ঘি এর কদর ভারতীয় উপমহাদেশের





সর্বত্র। বাংলার বহু রান্নায়, মূলত গুরুপাক খাবারে ঘি ব্যবহৃত হয়ে খাদ্যরসিক বাঙ্গালির রসনার তৃপ্তি ঘটিয়ে আসছে। পোলাও, বিরিয়ানিতে ঘি একটি অত্যাবশ্যক উপকরণ। এছাড়াও





নানান রকম ভর্তা ও ভাজিতেও ঘি তার চমৎকার গন্ধের জন্যে সমাদৃত। আমাদের দেশের রেস্তোরা গুলোতে ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরিতে ঘি এর বিপুল ব্যবহার হয়। আবার





নান ও রুটি সেঁকার পর এর ওপর ঘি এর প্রলেপ দেওয়া হয়। বিভিন্ন রকম মিষ্টান্ন, হালুয়া, লাড্ডু ইত্যাদি প্রস্তুতিতে ঘি ব্যবহৃত হয়।বিভিন্ন রকম ঐতিহ্যবাহী খাবার গুলোতে ঘি ব্যবহারের কারণ





হচ্ছে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করা। চাইলে ঘি এর পরিবর্তে ভোজ্য তেল ব্যবহার করা যায়। তবে এতে খাবারের প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যায় না। লবণবিহীন মাখনকে চুলোয় জ্বাল দিয়ে
ঘি প্রস্তুত করা হয়। প্রথমে পাত্রে মাখন এর নিয়ে জলটুকু বাষ্প হয়ে উড়ে না যাওয়া এবং প্রোটিনটুকু পাত্রের তলায় জমা না হওয়া পর্যন্ত তা জ্বাল দেওয়া হয়। পরিশোধিত ও
রান্না হওয়া মাখন চামচ দিয়ে তুলে নেওয়া হয়, যেন তা পাত্রের তলদেশে দুধের কঠিন অংশটুকুর জমাট বাঁধায় কোন বিঘ্ন না ঘটায়। ঘি ও মাখনের মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য হল ঘি রেফ্রিজারেটরে না রেখেও দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়, তবে সংরক্ষণ পাত্রটি বায়ুরোধক হতে হবেও আর্দ্রতা-মুক্ত হতে হবে] ঘি এর গন্ধ-স্বাদ এর প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হওয়া দুধ এবং জ্বাল দেয়ার সময়ের ওপর নির্ভর করে।
বাঙ্গালিরা গরুর দুধ থেকে তৈরি গাওয়া ঘি কে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ঘি বিবেচনা করে। বর্তমানে ইউটিউব কিংবা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ গণমাধ্যমে বিভিন্ন খাবার তৈরির বিভিন্ন রেসিপি সচরাচর পেয়ে থাকি। ঠিক তেমনিভাবে প্রাকৃতিক ভাবে দুধ থেকে ঘি তৈরি করার বিভিন্ন পদ্ধতির চিত্র ভিডিওতে ধারণ করে ইউটিউবে আপলোড করা হয়। ঠিক তেমনি আজকের এই ভিডিওটি একটি ভিন্ন পদ্ধতিতে গরুর দুধ দিয়ে ঘি তৈরি করা প্রক্রিয়া দেখানো হয়েছে।
চলুন দেরী না করে উক্ত প্রক্রিয়াটি দেখে নেয়া যাক। প্রক্রিয়াঃ প্রথমে একটি পাত্রে পরিমাণমতো দুধ নিয়ে চুলায় বসিয়ে গরম করতে হবে। এবং যতক্ষণ না পর্যন্ত দুধটুকু ফুটতে শুরু করেছে কতক্ষণ পর্যন্ত জ্বাল দিতে থাকুন। যখন দুধটুকু ফুটতে শুরু করবে তখন চুলা থেকে নামিয়ে নরমাল ফ্রিজে আধঘন্টা ফ্রিজিং করে নিতে হবে। আধঘন্টা পর তা ফ্রিজ থেকে বের করে একটি প্লাস্টিকের বোতলে ভরে নিতে হবে।
বোতলটি ভালো করে মুখ লাগিয়ে 10 থেকে 12 মিনিট ঝাকিয়ে নিতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত বোতলের গায়ে দুধের মাখন লেগে থাকতে দেখা যায় ততক্ষণ পর্যন্ত বোতলটি ভালো করে ঝাকিয়ে নিতে হবে। তারপর বোতলটি থেকে দুধটুকু একটি পাত্রে ঢেলে দিতে হবে। তারপর দুধটুকু হতে মাখন গুলো ছেকে আলাদা করে নিতে হবে। এভাবে 4 থেকে 5 লিটার দুধ হতে মাখন গুলো আলাদা করে একত্র করতে হবে।
তারপর মাখন গুলো একটি পাত্রে নিয়ে চুলায় বসিয়ে গরম করলে মাখন গুলো গলে ঘি হয়ে যাবে । এভাবেই আপনি খুব সহজে বাড়িতেই সুস্বাদু ঘি তৈরি করে নিতে পারেন। বর্তমানে বাজারে বোতল জাত ঘি পাওয়া যায়। তবে এগুলো বিভিন্ন ভেজাল উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়। যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। আমাদের প্রত্যেকের উচিত এই বাজারের পণ্যগুলো বর্জন করে খুব সহজেই নিজ হাতে ঘরে তৈরি করা। এই প্রক্রিয়ায় ঘি তৈরি করে ভাল ফলাফল পেতে ভিডিওটি দেখতে পারেন।
Leave a Reply